করোনা মহামারী প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে ব্যাংকের ১৬ নির্দেশনা

পৃথিবী জুড়ে করোনা ভাইরাস (কোভিড) ১৯ মহামারী আকারে রুপ নিয়েছে। করোনা ভাইরাস বিস্তার রোধ এবং এতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি সাধারন অথচ কার্যকর সতর্কতামূলক ব্যবস্থা রয়েছে। এসব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা অনুসরনের মাধ্যমে ব্যাংকের সকল পর্যায়ে করোনা বিস্তার প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। এই নির্দেশনায় বিভিন্ন ব্যক্তি, গোষ্ঠী, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের জন্য পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে।

কোভিড-১৯ মহামারী প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে ব্যাংকসমূহের জন্য পালনীয় কারিগরি নির্দেশনাসমূহ নিম্নরূপ:

১.খোলার আগে মহামারী প্রতিরোধী সামগ্রী যেমন মাস্ক, জীবাণুমুক্তকরণ সামগ্রী ইত্যাদি সংগ্রহ করুন, আপদকালীন পরিকল্পনা তৈরি করুন, বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থা করুন।

২.সকল কর্মচারীর এবং সকল বিভাগের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করুন, প্রত্যেককে দায়িত্ব ভাগ করে দিন ও এসব কাজের বাস্তবায়ন এবং এর বাধাগুলি দুর করতে চেষ্টা করুন।
Read More News

৩.কর্মীদের প্রশিক্ষণ জোরদার করুন। জনস্বাস্থ্যের বিষয়গুলি যেমন মাস্ক এর সঠিক ব্যবহার, হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার, শারীরিক দূরত্ব, হাত ধোয়া, জীবাণুমুক্তকরণ প্রশিক্ষণ দেন।

৪.কর্মীদের স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করুন, প্রতিদিন কর্মীদের স্বাস্থ্য বিষয়ক অবস্থা নথিভুক্ত করুন এবং যারা অসুস্থতা অনুভব করবে তাদের সঠিক সময়ে চিকিৎসা নিতে হবে।

৫. ব্যাংকে যারা ঢুকবে তাদের তাপমাত্রা মাপার জন্য ব্যাংক লবিতে তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণকারী যন্ত্র স্থাপন করুন এবং শুধুমাত্র স্বাভাবিক তাপমাত্রা সম্পন্ন ব্যক্তিরাই ঢুকতে পারবে। মাস্ক ছাড়া কোন কর্মচারীর ভিতরে প্রবেশ সংরক্ষিত করুন। প্রয়োজনে প্রবেশপথে অতিরিক্ত মাস্ক এর ব্যবস্থা করুন। কেউ ভুল করে না আনলে তাকে সতর্ক করে একটি মাস্ক দিয়ে দিন।

৬. বায়ু চলাচল বৃদ্ধি করুন। সেন্ট্রাল এয়ার কন্ডিশনার ব্যবহার করার ক্ষেত্রে এয়ার কন্ডিশনারের স্বাভাবিক সচলতা নিশ্চিত করুন, বিশুদ্ধ বাতাস চলাচল বৃদ্ধি করুন এবং সকল এয়ার সিস্টেমের ফিরে আসা বাতাসকে বন্ধ রাখুন।

৭. সর্বসাধারণের ব্যবহার্য সুবিধাসমূহ নিয়মিত পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করুন (যেমন কিউইং মেশিন, কাউন্টার চিফার মেশিন, রোলার পেন, ক্যাশ কাউন্টার, এটিএম, জনসাধারণের বসার জায়গা ইত্যাদি)।

৮. জনসাধারণের চলাচলের এলাকা যেমন ব্যাংকের লবি, এলিভেটর এবং তথ্যকেন্দ্র পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন এবং ময়লা সময়মতো পরিষ্কার করুন। ময়লা ফেলার বিন যেন ঢাকনা যুক্ত হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

৯. এটিএম ও প্রবেশ করার লাইনে দাঁড়ানোর বা ব্যবহার সময় নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার কথা মনে করিয়ে দেয়ার জন্য লাইনে ১ মিটার দূরত্ব বজায় রাখার ব্যবস্থা স্থাপন করতে হবে।

১০. ব্যবসায়িক কাজে ব্যাংকে আসা মানুষের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করুন, প্রতিদিনের ব্যবসায়িক কাজের জন্য ই-ব্যাংকিং অথবা এটিএম ব্যবহার পরামর্শ দিতে হবে। কাউন্টারে জীবাণুনাশকের ব্যবস্থা করতে হবে এবং সকলকে হাত পরিষ্কারের ব্যাপারে সচেতন করতে হবে।

১১. স্টাফদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা জোরদার করতে হবে এবং মাস্ক পরতে হবে; হাতের হাইজিনের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে এবং হাঁচি দেয়ার সময় মুখ এবং নাক টিস্যু বা কনুই দিয়ে ঢাকতে হবে।

১২. ব্যাংকে আগত সকলকে মাস্ক পরতে হবে। ব্যাংকের ভেতরে প্রবেশ বা ভেতর থেকে বের হওয়ার সময় একজনই কেবল দরজা খুলবেন এবং বন্ধ করবেন। হাত ধোয়া বা স্যানিটাইজার এর ব্যবস্থা করতে পারলে ভাল।

১৩. পোস্টার, ইলেক্ট্রনিক স্ক্রিন এবং বুলেটিন বোর্ডের মাধ্যমে স্বাস্থ্যজ্ঞান পরিবেশন ও প্রচার জোরদার করুন।

১৪. যদি নিশ্চিত কোভিড-১৯ রোগী থাকে তবে স্থানীয় সিডিসির বা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর নির্দেশনা অনুসারে পুরোপুরি জীবাণুমুক্তকরণ করতে হবে এবং একই সময়ে এয়ার কন্ডিশনিং ও ভেন্টিলেশন সিস্টেমকে পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করতে হবে। স্থাপনাটির স্বাস্থ্যগত পরিচ্ছন্নতার অবস্থা বা হাইজেনিক মূল্যায়ন হওয়ার আগে পুনরায় চালু করা উচিত হবে না।

১৫. মাঝারি ও উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায়, ব্যাংকগুলোকে তাদের বিজনেস আওয়ার সংক্ষিপ্ত করতে এবং ক্রেতার সংখ্যা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ/সংরক্ষিত করতে বলতে হবে।

১৬. বাড়িতে স্বেচ্ছা অন্তরীণ থাকাকালীন কিভাবে নিজের শরীর ও মনের যত্ন নিতে হবে তা শেখাতে হবে। মৃদু উপসর্গসমূহে বাড়িতে কি করে নিজের যত্ন ও চিকিৎসা নিবেন এগুলো শেখানো হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *