করোনা চিকিৎসায় এবার বাংলাদেশেও শুরু প্লাজমা থেরাপি

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এর প্রাদুর্ভাব বাংলাদেশেও বৃদ্ধি পেয়েছে। করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক আবিষ্কার না হওয়ায় ব্লাড প্লাজমার প্রয়োগ পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হচ্ছে।

এন্টিবডি থেরাপি বা ব্লাড-প্লাজমা থেরাপি পদ্ধতিতে করোনা ভাইরাস থেকে সুস্থ হয়ে উঠা ব্যক্তির ব্লাড-প্লাজমা আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে প্রয়োগ করলে আক্রান্ত ব্যক্তি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে পারে। কারণ পূর্বে আক্রান্ত হতে নিরাময় হয়ে উঠা ব্যক্তির শরীরে এন্টি-কোভিড-১৯ এন্টিবডি উৎপন্ন হয়ে আছে।

করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হচ্ছে প্লাজমা থেরাপি। ঢাকা মেডিকেল কলেজে প্রাথমিকভাবে এই কার্যক্রম শুরু হবে শনিবার থেকে। অন্তত ৪৫ জন রোগীর ওপর দেখা হবে কার্যকারিতা, সফল হলে চলবে আনুষ্ঠানিক প্রয়োগ।
Read More News

সংগ্রহের আগে ডোনারের শরীরে অন্যকোন ক্ষতিকর ভাইরাস বা রোগের উপস্থিতি আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে। সম্পূর্ণ সুস্থ্য হলেই তারা প্লাজমা দান করতে পারবেন। তবে এই পদ্ধতি রক্ত দাতা ও গ্রহিতার জন্য কোন ক্ষতির সম্ভাবনা নেই বলেও আশ্বস্ত করেছেন চিকিৎসকরা।

প্রয়োজনীয় কিট কেনা হচ্ছে স্পেন থেকে। পুরো প্রক্রিয়ার খরচ অনেক হলেও তা জোগাবে সরকার। মানুষের রক্ত থেকে সাদা কণিকা, লাল কণিকা ও প্লাটিলেট সরিয়ে নিলে যে তরল হলুদাভ অংশ অবশিষ্ট থাকে তাই প্লাজমা। এতে খনিজ, মিনারেলের, প্রোটিনের সাথে থাকে অ্যান্টিবডি।

এ নিয়ে দেশে গত এপ্রিলে একটি কমিটি গঠন হয়, আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রায় এক মাস পরে মিলে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের নীতিগত অনুমোদন। শনিবার থেকে প্রাথমিকভাবে এই কার্যক্রম শুরু হবে ঢাকা মেডিকেল কলেজে।

করোনা ভাইরাস ঠেকাতে এই প্লাজমা দিয়েই আক্রান্তদের চিকিৎসা দেয়ার চেষ্টা চলছে বিশ্বের অনেক দেশে। অর্থাৎ করোনা ভাইরাস থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীর প্লাজমা অসুস্থ্যদের শরীরে প্রয়োগ করা হলে, তৈরি হবে রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতা।

করোনায় আক্রান্ত রোগীর উপর প্রয়োগ করা চীনের দুটি পাইলট স্টাডির ফলাফল প্রকাশ করেছে নামকরা বিভিন্ন গবেষণা সাময়িকী ও দৈনিক পত্রিকাগুলো। একটি স্টাডিতে দেখা গেছে, উহান শহরের ডাক্তাররা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত থেকে নিরাময়কারীর ব্লাড প্লাজমা (কনভালেসসেন্ট প্লাজমা) করোনাভাইরাসে মারাত্মক আক্রান্ত ১০ জন রোগীর উপর প্রয়োগ করে দেখলেন যে রোগীর ভাইরাসের লেভেল দ্রুত কমে গেছে এবং তিন দিনের মধ্যে রোগী ছোট-ছোট নি:শ্বাস ও বুকে ব্যথা থেকে অনেক উন্নতি হয়ে জ্বরও কমে এসেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *