বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এনটিভির অনুষ্ঠান বিভাগের প্রধান, মোস্তফা কামাল সৈয়দ রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ দুপুর দেড়টায় মারা যান (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন স্বনামধন্য আবৃত্তিকার মোস্তফা কামাল সৈয়দ।
তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেন বিভিন্ন অঙ্গনের মানুষ। কর্মচঞ্চল এ মানুষটির মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না কেউ।
আজ রোববার সন্ধ্যা ৬টা ২৫ মিনিটে তাঁর জানাজা হয়। এরপর ৬টা ৪৫ মিনিটে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়। এ সময় তাঁর সহকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
Read More News
স্বনামধন্য টিভি প্রযোজক, নাট্য নির্দেশক, অভিনেতা, আবৃত্তিকার ও পরিচালক হিসেবেও পরিচিতি ছিল মোস্তফা কামাল সৈয়দের। বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) উপমহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি স্ত্রীসহ এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। তাঁর স্ত্রী কণ্ঠশিল্পী জিনাত রেহেনা।
মোস্তফা কামাল সৈয়দের মৃত্যুর খবরে এনটিভির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলহাজ্ব মোহাম্মদ মোসাদ্দেক আলী অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘জীবন-মৃত্যু মহান আল্লাহ তায়ালার হাতে। তবুও আমরা তাঁর সুস্থতা ও সুচিকিৎসার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছিলাম।
মোস্তফা কামাল সৈয়দের প্রযোজনায় বেশ কিছু নাটক দর্শকের কাছে প্রশংসিত হয়েছে। সত্তর দশকের শেষের দিকে তাঁর প্রযোজনায় মমতাজউদদীন আহমদ লেখা ‘প্রজাপতি মন’, আশি দশকের শুরুতে আন্তন চেখবের গল্প অবলম্বনে মমতাজউদদীন আহমদের লেখা ‘স্বপ্ন বিলাস’ ছাড়াও ‘নিলয় না জানি’, ‘বন্ধু আমার’, ‘নীরবে নিঃশব্দে’, কাজী আব্দুল ওয়াদুদের লেখা ‘নদীবক্ষে’ উপন্যাসের নাট্যরূপ ‘কুল নাই কিনার নাই’ ইত্যাদি সফল নাটকের সফল প্রযোজক ছিলেন মোস্তফা কামাল সৈয়দ।
অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা ফেসবুকে লেখেন, বাংলাদেশের একজন কিংবদন্তি! আজকে উনি চলে গেলেন! মোস্তফা কামাল সৈয়দ আমাদের দেশের টেলিভিশনের একজন দিকপাল! বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং এনটিভির অনুষ্ঠান প্রধান হিসাবে তিনি কেবল অগণিত শিল্পী এবং পরিচালকের বিকাশে সাহায্য করেছেন তা না, আমাদের রুচি তৈরিতেও বিশাল ভূমিকা রেখেছেন! আল্লাহ তাঁর বেহেস্ত নসিব করুন।
মোস্তফা কামাল সৈয়দ কর্মজীবনের বেশির ভাগ সময় কাটিয়েছেন টিভি চ্যানেলে। ২০০৩ সালে এনটিভির শুরু থেকে তিনি অনুষ্ঠান বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন। এর আগে বাংলাদেশ টেলিভিশনের অনুষ্ঠানপ্রধান ছিলেন। ৫২ বছরের কর্মজীবনে তিনি পাকিস্তান টিভিতেও শীর্ষ পর্যায়ে কাজ করেছেন।