দেশের বিভিন্ন স্থানের বিহারি ক্যাম্পগুলোর বাইরে সরকারি জায়গায় অবৈধভাবে বসবাসরত বিহারিদের উচ্ছেদের রায় দিয়েছে হাইকোর্ট। একইসাথে ক্যাম্পের ভিতরে বসবাসকারী জাতীয় পরিচয়পত্রধারী বিহারিদের পুর্নবাসনেরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার এ বিষয়ে দায়ের করা ৯টি রিট খারিজ করে বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জেবিএম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন। আদালতে রিটকারীদের পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী এএফএম হাসান আরিফ, ব্যারিস্টার সারা হোসেন এবং আইনজীবী হাফিজুর রহমান খান উপস্থিত ছিলেন।
Read More News
রিটকারী আইনজীবী হাফিজুর রহমান খান সাংবাদিকদের বলেন, মিরপুরের পল্লবীর বিহারি ক্যাম্প, মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্প, নীলফামারীর সৈয়দপুরের বিহারি ক্যাম্পের বাইরে সরকারি জায়গায় অবৈধভাবে যারা বাস করছে তাদের উচ্ছেদের রায় দেয়া হয়েছে। আদালতের এ রায়ের ফলে অবৈধভাবে বসবাসরত বিহারিদের উচ্ছেদে বাধা নেই। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আবদুল বাসেত মজুমদার ও সারা হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু। উল্লেখ্য, মিরপুর পল্লবী থানার অন্তর্ভুক্ত ক্যাম্পের আশপাশের সরকারি জায়গাসমূহ ১৯৯৫ সালে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন ব্যক্তির নিকট বরাদ্দ দেয় এবং প্লট বরাদ্দ পাওয়াদের পজিসন লেটার বুঝিয়ে দেয়া হয়।
২০০২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা সিটি করপোরেশন পল্লবীর ক্যাম্পগুলো আশপাশের বিহারিদের দোকানপাট উচ্ছেদের উদ্যোগ নেয়। এর বিরুদ্ধে ‘উর্দু স্পিকিং পিপলস ইউথ রিহাবিলিটেশন মুভমেন্টের সভাপতি সাদাকাত খান (ফাক্কু) ও শাহিদ আলী বাবলু বাদি হয়ে পল্লবী থানার অর্ন্তভূক্ত ক্যাম্পগুলো উচ্ছেদের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। এছাড়া সারা দেশের বিহারি ক্যাম্পগুলো নিয়ে বিভিন্ন সময়ে আরো আটটি রিট দায়ের করা হয়। এরপর হাইকোর্ট পল্লবী থানার অর্ন্তভূক্ত ক্যাম্পবাসীদের বাড়ি-ঘর, দোকান-পাট তাদের ব্যবহৃত খালি জায়গা থেকে বিকল্প ব্যবস্থা না করে এবং মামলা নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত উর্দুভাষীদের উচ্ছেদ না করতে অন্তবর্তীকালীন নির্দেশ দেন আদালত। আইনজীবী জানান, হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকার পরও জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পবাসীদের বাড়ি-ঘর দোকানপাট ভাংচুর করে উচ্ছেদের চেষ্টা করে। এর বিরুদ্ধে সাদাকাত খান (ফাক্কু) ২০০৩ সালে হাইকোর্টে আরো একটি রিট আবেদন করলে আদালত কর্তৃপক্ষের ওপর রুল জারি করেছিলেন।